মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায় - Ways to keep the mobile battery health



ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায় কেন?
ভালো করেই জানেন, ব্যাটারি একটি ছোট ধাতব বাক্সের মধ্যে কেমিক্যাল রিয়াকশন চালিয়ে আপনাকে পাওয়ার সাপ্লাই করে। যখন কোন ব্যাটারির দুই প্রান্তে কিছু লাগিয়ে ব্যবহার করা শুরু করা হয়, ব্যাটারির মধ্যে কেমিক্যাল রিয়াকশন শুরু হয়ে যায়। ব্যাটারির মধ্যে এক কেমিক্যালের সাথে আরেক কেমিক্যাল যুক্ত হয়, ভেঙ্গে যায় এবং নতুন কেমিক্যাল তৈরি করে — এভাবে উৎপন্ন হয় পজিটিভ চার্জ যেটাকে আয়ন বলে এবং নেগেটিভ চার্জ যেটাকে ইলেকট্রন বলা হয়। আয়ন সম্পূর্ণ ব্যাটারি জুড়ে দৌড়ে বেড়ায় আর ইলেকট্রন সার্কিট দিয়ে আপনার ডিভাইজে পাওয়ার জোগান দেয়। সাধারণ ব্যাটারিতে রিয়াকশন কেবল একদিকে এবং একইবার হতে পারে, আর এজন্যই সেগুলোকে রিচার্জ করা সম্ভব হতো না।
মডার্ন রিচার্জেবল ব্যাটারি গুলোতে আলাদা রসায়ন ব্যবহার করা হয়েছে, আর সেখানে একসাথে অনেক আলাদা আলাদা রিয়াকশন তৈরি হয়। এই ব্যাটারি গুলোতে দুই টাইপের রিয়াকশন কাজ করে, প্রথমত যখন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়, এটি এক প্রকারের রিয়াকশন চালিয়ে আপনার ডিভাইজকে পাওয়ার সঞ্চার করে, কিন্তু যখন ব্যাটারি ডিসচার্জ হয়ে যায়, তখন উল্টা রিয়াকশন চালিয়ে চার্জার থেকে চার্জ শুষে নিচের মধ্যে এনার্জি নিয়ে নেয়। আপনি যদি রসায়নের ছাত্র হয়ে থাকেন, বিষয়টি অনেক সহজেই বুঝতে পাড়বেন। মডার্ন রিচার্জেবল ব্যাটারি গুলোতে এই উভয় মুখি রিয়াকশন বারবার সম্পূর্ণ হতে পারে, আর এই জন্যই এই ব্যাটারি গুলো বছরের পর বছর ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
বহু টেকনিক্যাল টার্ম নিয়ে আলোচনা করলাম, এবার কাজের কথা বলা যাক, ব্যাটারি কেন নষ্ট হতে পারে? ওয়েল, এর প্রধান কারণটি হচ্ছে ব্যাটারি অত্যাধিক গরম হয়ে যাওয়া বা গরম পরিবেশের মধ্যে ব্যাটারির অবস্থান!
হয়তো আপনি সারারাত ব্যাটারি চার্জে লাগিয়ে রাখেন, যদিও ব্যাটারিতে ওভার-চার্জিং প্রোটেকশন থাকে, কিন্তু তারপরেও এতে হিট জেনারেট করতেই থাকে। যখন ইলেক্ট্রোলাইটকে জ্বালানোর মতো যথেষ্ট উত্তাপ ব্যাটারিতে প্রস্তুত হয়ে যায়, তখন ব্যাটারি বিস্ফোরিত হয়ে যেতে পারে। লিথিয়াম আয়ন বা যেকোনো ব্যাটারিতে পজিটিভ এবং নেগেটিভ ইলেক্ট্রোডকে আলাদা করে রাখা হয়, হয়তো সেখানে কোন সেপারেটর শিট ব্যবহৃত করা হয়।
অত্যন্ত তাপে সেই সেপারেটরে ছেদ হয়ে যায় এবং দুই ইলেক্ট্রোড একে অপরের সংস্পর্শে চলে আসে, ফলে ব্যাটারিতে দ্রুত প্রচণ্ড হিট জেনারেট হতে আরম্ভ করে। আর এই তাপে ইলেক্ট্রোলাইট জ্বলে উঠে এবং আগুনের ফুলকি উৎপন্ন হতে পারে। ব্যাটারির দুই ইলেক্ট্রোড আপনি যদি তারের মাধ্যমে এক করে দেন, তাহলে দেখতে পাবেন অনেক তাপ উৎপন্ন হবে এবং আগুনের ফুলকি জ্বলে উঠে, ঠিক এভাবেই ব্যাটারির মধ্যেও ঘটে আর ব্যাটারি বিস্ফোরিত হতে পারে। বা ব্যাটারি গরমে বিস্ফোরিত না হলেও অনেক দ্রুতই এর আয়ুকাল কমে যায়।
ব্যাটারি নষ্ট হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে ব্যাটারির বয়স! এটা সর্বদা আদর্শ হয় যদি ফোনের চার্জ ৭৫-৮৫% এর মধ্যে রাখতে পারেন। মানে ৮৫% চার্জ হয়ে গেলেই চার্জার থেকে ফোন খুলে ফেলতে পারেন। এতে শুধু ফোন ওভার হিটিং থেকে নয় বরং ব্যাটারি লাইফ ও অনেক দিন ভালো থাকবে। যদি সর্বদা ১০০% চার্জ করতে থাকেন ফোনকে, সেক্ষেত্রে ওভার হিটিং সমস্যা এড়াতে পারবেন না।
ব্যাটারির একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। আপনি যতোই ব্যাটারির যত্ন নিন, ধীরেধীরে এর পারফর্মেন্স কমতে থাকবেই। আর স্মার্টফোন ব্যাটারির গড় আয়ু হচ্ছে মাত্র ২ বছর, এরপরে ব্যাটারি আর ঠিক মতো কাজ নাও করতে পারে, ওভারহিটিং ইস্যু সামনে চলে আসতে পারে।

Post a Comment

Use Comment Box ! Write your thinking about this post and share with audience.

Previous Next

نموذج الاتصال