প্রাকৃতিকভাবে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায় কী ?

What are the natural ways to control diabetes ? 

প্রাকৃতিকভাবে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন: জলপাইয়ের তেল, পাতা ও ফল ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। পেপে পাতা শুকিয়ে ৪/৫ মিনিট ফুটিয়ে পান করুন। সজনে পাতার গুড়ো ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। নিম পাতা ইনসুলিন তৈরি করে। দারুচিনি ১০/১৫ মিনিট ফুটিয়ে পান করুন। দারুচিনি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। আমলকি ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এছাড়া করল্লার রস, ঢেঁড়স কেটে ভেজানো পানি ও তেলাকুচা পাতার রস ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।

ডায়াবেটিস একটি বিপাকীয় প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট রোগ যার কারণে দেহ যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে বা ইনসুলিন প্রত্যাখ্যান করে। ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক হারে। দুর্ভাগ্যজনক বিষয়টি হলো এই রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য নয়, তবে ওষুধ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম দ্বারা এটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্যকারী কিছু খাদ্য -

খেজুর: এটির মিষ্টি স্বাদের কারণে অনেকেই ভেবে থাকেন ডায়াবেটিক রোগীদের এটা খাওয়া ঠিক নয়, কিন্তু প্রচুর ফাইবারযুক্ত খেজুর আসলে ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ওষুধ হিসেবে কাজ করে খেজুর।

তিসি: এটি একধরনের বীজ যার ইংরাজি নাম ফ্ল্যাক্সসিড। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই বীজ খুবই কার্যকর। তিসি ফাইবার, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিডের ভালো উৎস। এটি রক্তে চিনির মাত্রা কমায় যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

দুধ: ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’-এর ভালো উৎস দুধ, আর সেজন্য দুধ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য উপকারী খাবার। অনেকের দুধ খেলে পেটে বায়ু হয়, সেক্ষেত্রে দুধের ফ্যাটি অংশটি ছাড়া টকদই ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারও খাওয়া যায়।

তুলসী: ঔষধিগাছ তুলসীকে বলা হয় ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন। গবেষণায় দেখা গেছে তুলসীপাতা বিবিধভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খালি পেটে তুলসীপাতার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। এছাড়াও তুলসীর রস চায়ের সাথে মিলিয়েও পান করা যেতে পারে।

মটরশুঁটি: হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে মটরশুঁটি। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মটরশুঁটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

করোলা: তিন থেকে চারটি করোলা নিন, এবার ভেতরের বীজগুলো ফেলে এটিকে ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস তৈরি করুন। নিয়মিত এই জুস খাওয়া রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে উপকারী।

নিম: নিম আরেকটি চমৎকার উপাদান রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি নিমের পাতা খালি পেটে খান। এটি ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির রোগীদের জন্য একটি উপকারী ঘরোয়া উপায়।

আমলকি: প্রতিদিন দু'বেলা ২০ মিলিলিটার করে আমলকির জুস খাওয়া ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ভালো। এছাড়া প্রতিদিন দু'বেলা আমলকির গুঁড়োও খেতে পারেন, এটি রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

গ্রিন টি: এই ভেষজ চা পেনক্রিয়াসের কার্যক্রম বাড়িয়ে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে, তাই রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত গ্রিন টি পান করতে পারেন।

এগুলি ছাড়াও রইলো কিছু পরামর্শ:

  • প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট হাঁটা বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। হাঁটার ক্ষেত্রে টানা ৪০ মিনিট একটানা হাঁটলে উত্তম ফল পাওয়া যায়।
  • এমন ব্যায়াম বা পরিশ্রম করতে হবে, যাতে শরীর থেকে ঘাম ঝরে। হঠাৎ খুব কঠিন ব্যায়াম শুরু না করে প্রথমে ওয়ার্কআপ বা হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে হবে। ধীরে ধীরে গতি বাড়াতে হবে।
  • দেহের ওজন বাড়তে দেওয়া যাবে না। যাদের ওজন ইতোমধ্যে বেড়েছে, তারা ওজন কমাতে ব্যবস্থা নিন (যেমন- খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম, দৌড়ানো, হাঁটা ইত্যাদি)।
  • প্রতিদিন শাকসবজি রাখুন খাদ্যতালিকায়। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, যেমন- ভাত, আলু কম খান।
  • রেড মিট খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • আইসক্রিম, পনির, ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিঙ্কস ও কৃত্রিম জুস এড়িয়ে চলুন।
  • ঘি বা মাখন কম খান বা বাদ দিন।
  • দিনে ৮-১০ গ্লাস জল পান করুন।






Post a Comment

Use Comment Box ! Write your thinking about this post and share with audience.

Previous Next

نموذج الاتصال